
এবার পূজোয় কেমন ফ্যাশন !
বাংলির শ্রেষ্ট উৎসব দূর্গাপূজা, সেই পূজাকে উপলক্ষ করে বাংলি তথা ভারতবাসীর খুশি আর আনন্দে মেতে ওঠে শরতের কয়েক মাস আগে থেকেই , এবছর এই ট্র্যাডিশনে বাধসাধলো করোনা, তাই বংলার মুখ ভার, প্রতিটা ভারতবাসী তথা বিশ্ববাসীই আজ আতঙ্কে দিন কাটাছে। তারই মধ্যে শরতের আগমনী বার্তা বাংলার ঘরে ঘরে। আর তার তোড়জোড় শুরু হয় চার মাস আগে থেকেই। বাংলার তাঁতশিল্পীরা, ডিজাইনাররা পুজোর নকশা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে দেন নববর্ষ থেকে। বহু বছর ধরে চলে আসা এই ট্র্যাডিশনে ভাঙন ধরাল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ। পুজো কীভাবে হবে, বা আদৌ কোনও বড় বারোয়ারি পুজো হবে কি না, কিছুই জানা নেই আমাদের। তার ওপর মহামারীর আতঙ্কে আমাদের কাজে উংসাহ নেই, মনে উদ্যম নেই। এই মহামারীর আতঙ্ককে সঙ্গে নিয়ে আমাদের শিল্পীরা কি পারবে তাঁদের প্রতিভা উজা়ড করে দিতে তাদের সৃষ্টিতে ?
আনন্দও থাক এবং স্বাস্থ্য থাকুক সৃষ্টিতে
জীবন তো থেমে থাকে না। এগিয়ে চলে আপন খেয়ালে। তাই আমাদেরও থেমে থাকলে চলবে না। বরং এমন কিছু করতে হবে যা মানুষের কাজে লাগে। এই সংক্রমণের সময়ে যেন সে সঠিক প্রোটেকশন পায়। তাই তাঁর নতুন কালেকশনের ফ্যাব্রিক টেফলন আর অ্যান্টিভাইরাস কোটিংয়ে তৈরি। এই কোটিং শাড়ি বা পোশাক বারবার ওয়াশ করলেও নষ্ট হবে না। মেয়েদের কুর্তি, কামিজ, ইন্দো-ওয়েস্টার্ন ড্রেস, ছেলেদের কুর্তা, জ্যাকেট করছেন খাদি, হ্যান্ডলুম ও চান্দেরি মেটিরিয়ালে। কারিগরদের ওয়ার্কশপে থেকে দিন রাত এক করে কাজ করতে হচ্ছে। প্রত্যেকটি ড্রেস বা শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে মাস্ক থাকছে। ছেলেদের জ্যাকেটের সঙ্গে ইন্টারেস্টিং ডিজাইনের মাস্ক এবারের পূজা স্পেশাল।
এবার পূজায় মিক্সড তসর এবং নতুন ডিজাইনের কুর্তা ও ম্যাচিং ধুতি

এবার যা পরিস্থিতি তাতে খুব দামি সিল্ক বা খুব কারুকাজ করা হেভি শাড়ি বাজারে সেভাবে পাওয়া যাবে না । পুজোতে সকলেই এই ধরনের দামি শাড়ি কিনতে ইচ্ছা থাকলেও, কিন্তু এই বছর সেই মানসিকতাই নেই। তাই বেনারসের তাঁতশিল্পীদের বোনা এক ধরনের মিক্সড তসর এবার আসছে বাজারে। র-তসর আর কটনের মিশেলে তৈরি এই মেটিরিয়াল দেখতে জমকালো কিন্তু দাম বেশ কম। এছাড়াও মেয়েদের একটু অন্যরকম কাটের কুর্তি, স্মার্ট লুক ড্রেসও রয়েছে যা ডেলিওয়্যার হিসেবে ভালো। পুজোয় বাঙালি ছেলেদের ধুতি পাঞ্জাবি চাই-ই। এবার পুজো কেমন কাটবে কেউ জানেন না। তবু অনেকেই পাঞ্জাবির দিকেই ঝোক। এক্ষেত্রেও খুব দামি সিল্ক তসরে না গিয়ে কটন ফ্যাব্রিক দিয়ে নতুন ডিজাইনের কুর্তা ও ম্যাচিং ধুতি তৈরি করছেন ডিজাইনাররা। সঙ্গে থাকছে ইক্কত বা কলমকারি জহরকোট।
পূজার আনন্দে মেতে উঠুন গোলাপি রঙে
অন্যান্যবার পুজোর চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই পূজার ব্যস্থতা শুরু হয়ে যায়। এবার শুধু ভয় আর আতঙ্ক। মুক্তি পেতে হাত বাড়িয়েছি গোলাপের রঙে। গাঢ় গোলাপি, হালকা গোলাপি, কমলাটে গোলাপি, রানি রং, লাল এই সব রং-এর দিকেই ক্রেতাদের আর্কষন বেশী। মনে হয় গোলাপি আমাদের মন চাঙ্গা করে দেবে। প্রতি বছরের মতো জাঁকজমক করে পুজো না-ই বা হল, তবু মাতৃ আরাধনার দিনগুলোয় নতুন শাড়ি তো পরতেই হবে। সঙ্গে একটা ডিজাইনার ব্লাউজ হলেই সাজ কমপ্লিট। এছাড়াও বাংলার তাঁতশিল্পীরা তৈরি করছেন হ্যান্ডলুম শাড়ি যা বাজারে আসতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। লং-লেন্থ আনারকলি, ডিজাইনার কুর্তিও এবারের পূজার স্পেশাল আইটেম।
শাড়ি, স্মার্ট লেহেঙ্গা আর ক্যাজুয়াল পাঞ্জাবিতে পূজোর আহবান
শাড়ি আর লেহেঙ্গার খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পড়ি দিয়েছে বিদেশেও। প্রতি পুজোয় জরি জারদৌজি ব্রোকেড আর বেনারসের চান্দেরি বাজার দখোল করে থাকে বঙ্গললনাদের । এবার এই সংক্রমণের পরিবেশের সঙ্গে অমন ঝকঝকে শাড়ি কি মানায়? তাই হালকা ফ্যাব্রিক আর একটু সাবডিউড কালার প্যালেটে নতুন কালেকশন বাজারে দেখা যাবে। স্মার্ট ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট স্ট্রাইপস, গ্রে আন্ড ব্ল্যাক চেকসও রয়েছে। এছাড়াও এমন মেটিরিয়াল ব্যবহার করতে হবে, যাতে বারবার কাচলেও নষ্ট হয়ে না যায়। ইন্দো-ওয়েস্টার্ন শাড়ি শুধু ইয়ং জেনারেশনই নয়, সব বয়সের সব ধরনের মেয়েই পছন্দ করেন। ফিগার, প্রফেশন, বয়স অনুযায়ী কাস্টমাইজ করে দেন বিভিন্ন ড়িজাইনার। লং স্কার্ট, ওয়ান পিস ড্রেস, স্মার্ট লেহেঙ্গা, অফবিট কুর্তি, ছেলেদের জন্য ক্যাজুয়াল পাঞ্জাবি, সবই দেকা যাবে এবারের পূজায়।
কি আশায় বাঁধি খেলা ঘর
একদিকে অর্থনৈতিক মন্দা, অন্যদিকে মহামারী আতঙ্ক ঘুম কেড়েছে মানুষের। ক্রেতার যেমন মন জুড়ে অবসাদ, ডিজাইনারদেরও অনেক অসুবিধে। ট্রেন বন্ধ, তাই কারিগরেরা আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। এমন হাজার অসুবিধের মধ্যে দাঁড়িয়ে ডিজাইনাররা টাকা ইনভেস্ট করতে দ্বিধা বোধ করছেন। তবে এখনও তো সময় আছে হাতে সেই আশায় কোমর বেঁধেছে ফ্য়াশন ইন্ডাস্ট্রি।

এটুকুই আমাদের একমাত্র আশা ভরসা।


0 Comments